Fri. Jun 9th, 2023

ঘুম থেকে উঠে সবাই চা খায়, কিন্তু সন্তু কে কেউ জিজ্ঞাসাও করেনা। বাচ্চা বলে কি ওর চা খেতে মন চাইনা!
গল্পটা এক খুদে ছেলের। বাবা মা ঠাম্মি আর দিদিভাই নিয়ে তার ছোট্ট সংসার। ঠাম্মার কাছে গল্প আর মায়ের সাথে রান্না ঘরেই কাটে সারাটি দিন, তারপর দিদিভাই স্কুল থেকে ফিরলে রান্না বাটি আর পুতুল খেলা।

চা এর উপর কেমন যেন একটা অদ্ভুত টান অনুভব করে সন্তু। গ্রামের বাড়িতে মা রান্না-বান্না করে ওই মাটির উনুনে বা চুলা তে, কিন্তু চা হয় ছোট্ট একটা জনতা পিতলের স্টোভে। একদিন কিছু আত্মীয় এলো সান্তুর বাড়িতে, যথারীতি মা চা বানাবে।খেলা ধুলো ছেড়ে সন্তু এসে বসলো ওই টেবিলটার উপর, যেটাই সেই ছোট্ট স্টোভটি রাখা। মা চা বানাবে, কি অদ্ভুত লাগে সেটা দেখতে। স্টোভ ধরানো থেকে শুরু করে কাপে চা ঢালা অব্দি এক রোমাঞ্চকর বৃত্তান্ত। যাইহোক, পাশে রাখা ছিল স্টোভ ও স্টোভ ধরানোর জন্য এক বাক্স স্টিলের পিন (কাঠি)। সন্তু মা কে দেখেছে , এটা দিয়ে মা কি যেন একটা করে আর স্টোভটা ঝুপ করে জ্বলে ওঠে।

একদিন কৌতূহল উপচে পড়া চোখ, হাত বাড়িয়ে একটা তুলে নিলো হাতে। ওমা একি, স্টিলের কাঠির (স্টিলের পিন) ডগায় এমন ছোট্ট সূঁচ লাগানো কেন! নানা এই সূঁচটা যদি মা এর হাতে ফুটে যায়, তখন তো রক্ত বেরিয়ে যাবে! যেমন ভাবা তেমন কাজ, কুট কুট করে বাক্সের সমস্ত কাঠি থেকে পিন ভেঙে ফের কাঠি গুছিয়ে রাখলো বাক্সে।

তারপর সেই চরম মুহূর্ত, মা চা বানাতে এলেন, স্টোভ জ্বালাতে গিয়ে অবাক, কোন কাঠিতে পিন নেই। আশ্চর্য হয়ে এদিক ওদিক খুঁজতে মা এর চোখ গেল সন্তুর দিকে। সেকি ভুবন ভোলানো হাসি, গর্বিত পুরুষের মত সে বলে উঠলো-

“মা ওগুলো আমি ভেঙেছি,পাছে তোমার হাতে ফুটে রক্ত বেরোয়,তাই আমি সব গুল ভেঙে দিয়েছি”

এক মুহূর্তের জন্য মা হতভম্ব, মাথা গরম করে দুম-দুম দুই থাবা পিঠে, তারপর চিৎকার…
মা মনে ভাবলো ছেলে আমার কত ভাবে মা এর কথা ,আদর করে কোলে নিলো সন্তুকে, আল্হাদে ভোরে উঠলো মা এর কোল।

By Suparna Ghosh Kunda

নিজের কথা লিখতে গেলে গুলিয়ে যায়, বলতে জিভ জড়িয়ে যায়। তবুও নিজের কথা বলতে কার না ভালোলাগে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *