কলেজ স্ট্রিটের পেরামাউন্ট

পেরামাউন্ট, আশ্চর্য একটি সরবতের দোকান, যেখানে খালি সরবত বা পানীয় ছাড়া আর কিছুই নেই। কলেজ স্ট্রিটে একটি কাজে গিয়ে, উত্তর কলকাতার বিখ্যাত দোকানটি চোখে পড়লো হটাৎ করে। ভিতরে বেশ জমজমাট ভিড়। ভেতরে ঢুকে মেনু কার্ড এ চোখ পরতেই দেখি ৯০ আর ১০০ ছাড়া তার নিচে আর কিছু নেই। ভারী আশ্চর্যের কথা, ভারী তো আমার সরবত, তার আবার এত দাম!!

অর্ডার করলাম মালাই লাসসি। প্রথম চুমুকেই আমার পয়সা শোধ।লস্যি তে কি এসবও দেয়! উপরে রয়েছে রাবরী,সাথে বাদাম টকদই,মিচরি, ক্রিম,সব মিলিয়ে যেন অমৃত। এরকম সুন্দর শান্ত ঠান্ডা জায়গা সাথে এমন অসাধারণ পানীয় পেয়ে বেশ লাগলো। দোকানটি ঠিক কলকাতা বিশ্যবিদ্যালয় এর বিপরীতে,কলেজ স্কয়ার এর ঠিক পেছনে নিতান্তই সাদামাটা একটু ছোট দোকান।ঢুকতেই বাম দিকে একজন পৌর,ক্যাশ কাউন্টার এ অর্থাৎ জাকজমক হীন কাঠের একটি ড্রয়ার বিশিষ্ঠ টেবিলে টাকা পয়সার হিসেব রাখছেন। তারপরই শুরু সারি সারি টেবল ও চেয়ারের বদলে ছোট ছোট বেঞ্চ।এক একটি টেবিলে চারজন কিংবা জোর করে ছয় জনও বসা যেতে পারে।টেবিল গুলি ক্যাশ কাউন্টারের ঠিক পেছনে সারি সারি সাজানো।দেওয়ালে রয়েছে নামী চিত্রকারের কিছু ছবি, কিছু ফটোগ্রাফ, ও বাহারি সব নাম যুক্ত মেনু কার্ড।ঠিক তার বিপরীতে দেওয়ালের সঙ্গে আটকানো ঝুলন্ত টেবিল সাথে কাঠের চেয়ার। ঝুলন্ত টেবিলে বসে উপর দিকে তাকালে অবাক হতে হবে ।সেখানে রয়েছে ইয়া বড় বড় দুটি হরিনের সিং শুদ্ধ মাথা।তাছাড়াও রয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দীর কারুকার্য যুক্ত ইলেকট্রিক পাখা ও করিবর্গা।আর একটু এগিয়ে আসলে দেখা যাবে কচি ডাব। যেগুলি দেওয়ালের গায়ে দুটি লোহার তক্তা জাতীয় জিনিস দিয়ে ঘেরা তৈরি করে তাতেই রাখা রয়েছে।দাবি গুলির প্রতিটা ছেলা,মাথা টুকু ফুটো করলেই পানের জন্য তৈরি । এর পর রয়েছে ভেতরের ঘর।যেখানে তৈরি হচ্ছে কত সব সুস্বাদু সরবত,ঠান্ডা। এই গ্রীষ্মে এ যেন স্বর্গ।অনেক্ষন রোদে হেটে আমি যে কি স্বস্তি পেলাম।

পুরোনো কলকাতার এত সুন্দর একটি বস্তু আবিষ্কার করে বেশ খুশিই হলাম। সুযোগ পেলেই যাবো, আর যাবো মা কে নিয়ে একবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *