দীর্ঘ ৩ বছরের কোর্টশিপ, তারপর বিয়ে.. মৃনাল সুস্মির বিয়ের আজ ৬ সপ্তাহ, কাল উইক এন্ড এ একটা খুব ছোট্ট ব্যাপার নিয়ে ওদের মধ্যে এক চোট ঝগড়া হয়ে গেছে। সুস্মি এবার আর কিছুত্তেই আগে Sorry বলে না, ওদিকে মৃনালের ও একই জেদ। বেশ তবে তাই হোক। সোম থেকে শনি কর্পোরেট জগতের কাজের চাপে দিনগুলো কখন কি করে কেটে যায় বোঝে না দুজনেই। শেষে এলো শনি বার,আজ মনটা খারাপ করছে ভীষণ, সুস্মি ভাবলো এতো ego যে একবার কথা ও বলা যায়না।
কেন শুধু ওকেই বার বার আগে যেতে হবে কেন? মৃনাল কখনো আগে আসেনা নিজেদের মাঝের দূরত্বটা কমাতে। প্রশ্নের জাল বুনতে বুনতে বাড়ি পৌঁছলো সুস্মি, মৃনাল আসেনি। ওদিকে মৃনালের ও একই হাল, মেয়েটা আগে তো কখনো এতো রাগ করেনি! তবে আজ কেন? কি ই বা হয়েছিল? সামান্য কথায় এতো রাগ!! মনটা ভীষণ খারাপ, সুস্মি কে একটা মেসেজ লিখেও মুছে দিলো। এটাই বোধয় male ego। রাতে আজ মৃনাল বাড়ি ঢুকেছে ১০টায়, সুস্মি রাতের ডিনার টেবিলে খাবার ঢেকে রেখে শুয়ে পড়েছে। দরজার আওয়াজ পেয়েই চোখ বুজল, মৃনাল যেন বুঝতে না পারে যেও জেগে আছে।
রবিবার সকালটা ওরা ওঠে একটু দেরিতেই, দুটো মানুষ। সারাটা সপ্তাহ ব্যস্ততায় কাটে, তাই এই দিনটা ওরা শুরু করে নিজের মতো। কিন্তু সে অভ্যাসে আজ ব্যাঘাত ঘটলো, ঘুম ভেঙে মৃনাল, সুস্মি কে পেলোনা। ও ভেবে রেখে ছিল এই সকলটাই ও নিজেদের ভুল বোঝাবুঝি শেষ করে প্রেমে ফিরবে। সুস্মি গোমড়া মুখে সক্কাল সক্কাল স্নান সেরে ব্রেকফার্স্ট বানাচ্ছে রান্নাঘর এ, মৃনাল ড্রইং রুমে পেপার খুলে ইজি চেয়ারটাতে হেলান দিয়ে। ঠক!! সশব্দে চায়ের কাপটা টেবিলের উপর রেখে নিস্পলক দৃষ্টি তে সুস্মি দিকে তাকিয়ে নিলো, মনে মনে ভাবল দেখি তুই কত বড় হয়েছিস? আমি তো তোর কাজের লোক, চা টা খেয়ে আমায় উদ্ধার কর। কাপ টা মুখে তুলেই নিম পাতার অনুভূতি, না ও নিশ্চই ইচ্ছে করেই চিনি টা দেয়নি। ঠক!! শব্দের আড়ালে জানান দিলো, এটা কি হয়েছে? জঘন্য একটা। কুঞ্চিত ভ্রু, এক ঝটকায় কাপ তা তুলে চুমুক দিলো সুস্মি, চিনি তো ঠিক আছে! (প্রথমে হয়তো চিনি টা ঠিক মতো মেসেনি) চোখ মোটা করে মৃনাল কে দেখলো, ফের কি একটা ভুল হয়ে গেলো মৃনাল এর!
ধুক ধুক বুকে আর একটা চুমুক, গাল ভরা হাসি নিয়ে সুস্মির হাতটা টেনে নিয়ে মৃদুল বললো
“আহঃ!! কি মিট্টি লে তুই, সব তা মিট্টি করে দিলি”
-সুপর্ণা ঘোষ (০২ অগাস্ট ২০১৭)