পেশায় সাংবাদিক ও নেশায় লেখক শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যাইয়ের পঞ্চম উপন্যাস তেরো নদীর পারে। গল্পের প্রেক্ষাপট অ্যামেরিকার ৯/১১ এর বিধ্বংসী নাশকতা, বাংলাদেশের ঢাকা শহর ও অন্যান্য। সমুদ্রে বড় ঢেউ উঠলে যেমন বিস্তৃত এলাকা জুরে তার তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে, ঠিক তেমনই ৯/১১ এর নাশকতা ভেঙে চুরমার করে দেয় গল্পের প্রথম প্রধান চরিত্র, ইউরোপে ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠরত হাফিজুলের।। কাহিনীর আর এক চরিত্র রাজেশ্বরী। ছেলে বেলায় পরিবারের প্রিয়জনের থেকে যৌন হেনস্থার ও প্রেমিকের অবমাননার শিকার।
তবুও বেঁচে থাকতে মরিয়া রাজেশ্বরী ভাগ্য চক্রে পৌঁছে যায় ইউরোপে। ঢাকা শহরের মুক্ত চিন্তার মানুষ, মানবতাবাদী, লেখক, সাংবাদিক, ব্লগার খুন হলেন একে একে এবং এসবের পেছনে রয়েছেন রহস্য ময় এক চরিত্র ‘শেখ সাহেব’ গল্পের আর এক অন্যতম প্রধান চরিত্র এই শেখ সাহেব। কলম্বিয়ার কফি ও বেটোফেনের সিম্ফনির অনুরাগী, সাদা আলখাল্লায় শেখ সাহেব ঘোরেন হুইলচেয়ারে এবং আইসিস জঙ্গিদের স্লিপার সেল চালান বিশ্বের নানা জায়গায়। কিন্তু চিরকাল এরকম নৃশংস ছিলেন না তিনি ….ঘটনা চক্রে রাজেশ্বরী জড়িয়ে পড়ে এমনই কোন এক জঙ্গি হানার ঘটনায়। গল্পের এই অংশে দেখা যায় তার অসীম মনবল ও বিশ্বাস। যে বিশ্বাস তাকে ভাবায়, সন্ত্রাসের এই নির্মম মুখোশের আড়ালে আছে আহত, রক্তাক্ত একটি মুখ। তাই সে নিজের সর্বস্ব হারিয়েও সহানুভূতির হাত বারিয়ে দেয়।
উপন্যাস টি বেশ সাবলীল ও সাহসী, সত্যের তরতাজা ক্ষতকে কনভাবেই মিষ্টি কোথায় ঢেকে ফেলা হয়নি। এখানে গভীর অসুখের কথা বলতে কোন সমঝোতা নেই।পড়তে পড়তে বার বার মনে হয়েছে এটি একটি মারাত্মক লেখনী, এরকম ভাবনা ও চরিত্র বুননে লেখনীর পারদর্শিতা প্রশংসার দাবী রাখে।।
প্রচ্ছদঃ শৌড়ীষ মিত্র
মূল্যঃ ২৭৫ টাকা