ঘুম ভাঙলো ফোনের আওয়াজে, কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে শ্রী এক নিঃশ্বাসে বলে গেল, “হতচ্ছাড়া ঘড়ি দেখেছিস উজবুক! এত ঘুম তোর? আমি রেডি হয়ে সকাল থেকে কল করেই চলেছি, এতটুকুও দায়িত্ব নেই রে,তুই কবে বড় হবি!!”
রিদ্ধির একেবারে ভিমরি খাবার জোগাড় হলো, রাতে দুটো বিয়ার খেয়ে, পরপর ১৫মিনিট অন্তর অন্তর এলার্ম লাগিয়ে শুয়েছিল, ঘুমের ঘোরে সে সব বেজে সারা, ঘুম বাবাজি দিব্বি ঠিক ছিল, একসাথে হটাৎ ফোনের ওপারের টাইফুন রিদ্ধি কে আকাশ থেকে মাটিতে ফেললো। এই রে, অষ্টমীর সকালটা তো শ্রী এর জন্য বরাদ্দ ছিল শুরু থেকেই, এবার কি হবে!! ওদিকেতো তিনি রুদ্র মূর্তি ধারণ করে অপেক্ষারত।
কোনো মতে স্নান সেরে আগুন রাঙা পাঞ্জাবি গলিয়ে দে দৌড়। পাড়ার মোড়ে ক্লাবের পুজো, মণ্ডপের সামনে এক চিলতে ফাঁকা জায়গা, আজ একঝাঁক সুন্দরী তে যেন চাঁদের হাট বসিয়েছে। রিদ্ধি ইতি উতি চোখ বুলিয়ে নিলো সুন্দরীদের ঝাঁকে, কিন্তু শ্রীকে খুঁজে পেলোনা। পকেট থেকে ফোন বের করে কল করে দেখে সুইচ অফ। মরেছে আজ কপালে কষ্ট আছে বুঝতে দেরি হলোনা। এক দৃষ্টে মণ্ডপের ওই বোরো ফেন টার দিকে তাকিয়ে ভাবছে, হটাৎ পিঠের উপর সজোরে এক চাপর।
উ উ করে পেছন ফিরে , উফফ সে কি রূপ, এটা কে, কাকে দেখছে রিদ্ধি, এই কি সেই ছটপটে ডানপিটে শ্রী! চেনা যাচ্ছেনা, রিদ্ধির যেন চোখ আটকে গেলো কপালের ওই লাল টিপে, তারপর চোখের কাজল ,ঠোঁটের লাল, হলুদ শাড়ি, একদম একদম সেই বার বার স্বপ্নে দেখা স্বপ্নচারিনি। দাঁত খিঁচিয়ে শ্রী বলে উঠলো ,কি দেখছিস! আগে মেয়ে দেখিসনি?
সম্বিৎ ফিরলো রিদ্ধির, এক ঝটকায় হেঁচকা টানে শ্রী কে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো, আচমকা এমন কিছু আশা করেনি শ্রী,লজ্জায় লাল শ্রী নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে যাবে, কানের কাছে শুনতে পেল ,ফিস ফিস,
“ঐ, তুমি কি আমার সুখে থাকার অসুখ হবে! তুমি কি আমার বউ হবে!”
— সুপর্ণা ঘোষ (২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭)